রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: নিষেধাজ্ঞাকালীন বর্ধিতসময়ের মধ্যে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি পর্যাপ্ত না বাড়ায় হ্রদে আহরণের নিষেধাজ্ঞা আরও ১৫ দিন বেড়েছে। এসময়ে বিগত তিন মাসের মতো হ্রদে সকল প্রকার মাছ ধরা, বাজারজাতকরণ বন্ধ থাকবে। দক্ষিন এশিয়ার বৃহত্তস কৃত্রিম হ্রদে পানি না বাড়ায় এই আদেশ দেন জেলা প্রশাসক।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পানি পর্যাপ্ত পরিমাণ না বাড়ায় করণীয়নির্ধারণে বৈঠক ডাকে জেলা প্রশাসন। ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রতি বছরের এই তিনমাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও ১ আগস্ট থেকে স্বাভাবিক নিয়মে আহরণ শুরু হওয়ার কথা। তবে হ্রদের পানি পর্যাপ্ত না বাড়ায় ও মাছের পোনার সুষম বৃদ্ধির লক্ষে নিষেধাজ্ঞার সময় আরও ১৫ দিন বাড়িয়ে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে এসময়েও যদি পর্যাপ্ত পানি না বাড়ে সেক্ষেত্রে পরবর্তী সিদ্ধান্ত আবার বৈঠক করেই নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনেকক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙ্গামাটি বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. তৌহিদুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) রাঙ্গামাটি নদীউপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা লিপন মিয়া, মৎস্য ব্যবসায়ী উদয়ন বড়ুয়া, আব্দুর শুক্কুর, হারুন সওদাগরসহ অন্যরা।
বৈঠকে সভার যৌথ সম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বৈঠক সূত্র। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএফডিসি রাঙ্গামাটি বিপণনকেন্দ্রের বিপণনকর্মকর্তা মো. শোয়েব সালেহীন জানান, আপাতত বৈঠকে ১৫ দিন নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সময়ে পূর্বের নিয়মগুলো জারি থাকবে।
স্বাভাবিকভাবে কাপ্তাই হ্রদের পানি ১০০ এমএসএলের উপরে থাকলে হ্রদে মাছ ধরা শুরু করা যায়। কিন্তু আজ বিকেল পর্যন্ত পানির পরিমাণ মাত্র ৯১ দশমিক ৬০ এমএসএল। প্রসঙ্গত, প্রতি বছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ থাকে।
এসময় হ্রদের মাছ বাজারজাতকরণ ও স্থানীয় বরফকলগুলোও বন্ধ থাকে। হ্রদে নিষেধাজ্ঞা মানাতে নৌ-পুলিশের পাশাপাশি বিএফডিসির মনিটরিং দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু বিগত তিন বছর ধরে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না বাড়ার কারণে বিলম্বে মাছ আহরণ শুরু হচ্ছে। গত বছর পর্যাপ্ত পানি না বাড়ায় পুরো আগস্ট জুড়ে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় তিনমাসের নিষেধাজ্ঞা চারমাসে ঠেকেছে। এর আগের বছরও ১০ দিনে বাড়িয়ে ১১ জুলাই মধ্য রাত থেকে মাছ আহরণ শুরু হয়। কিন্তু এর আগের স্বাভাবিকনিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি।